নতুন করো’নাভাই’রাসটি প্রা’ণঘা'তী হওয়ার কারণ হচ্ছে, এটি গু'রুতর অ’সুস্থ রোগীদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় প্রদাহ তৈরি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভাই’রাসটি এত বড় পরিসরে প্রদাহ তৈরি করে যে, শরীর পুরো ভেঙে পড়ে। একস'ঙ্গে একাধিক অ'ঙ্গ প্রত্য'ঙ্গ ফেল করে। বিশেষ করে কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে অ’তিরিক্ত প্রদাহে ফুসফুস অকার্যকর 'হতে দেখা গেছে। তাই করো’নাকালে সকলেরই শরীরের ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো উচিত এবং ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ দূর করা উচিত।
প্রদাহ কমাতে ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসা গু'রুত্বপূর্ণ হলেও অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ডায়েটও সহায়ক 'হতে পারে। অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ডায়েট হলো সেসব খাবার যা প্রদাহ হ্রাস করতে পারে। অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ডায়েট স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবেও স্বীকৃত, তাই এসব খাবার খেলে অন্যান্য সমস্যার ঝুঁ’কিও কমতে পারে। শুধু অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ডায়েটের ওপর থাকলে হবে না, প্রদাহ বৃ'দ্ধি করে এমন খাবার খাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। এখানে প্রদাহ কমাতে কি খাবেন কি খাবেন না তা স’ম্পর্কে সংক্ষি'প্ত আলোচনা করা হলো।
যা খাবেন
ফল ও সবজি: বিচিত্র রঙের ফল, সবজি ও শাক খেতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে যে পালংশাক, ব্রোকলি ও বাধাকপির মতো ভিটামিন কে সমৃ'দ্ধ খাবার প্রদাহ কমাতে পারে। ফলের মধ্যে চেরি, রাসবেরি ও ব্ল্যা'কবেরি প্রদাহ রোধে সহায়ক।
গোটা শস্য: ওটমিল, বাদামী চাল, অ’পরিশোধিত গমের রুটি বা পাউরুটি ও অন্যান্য অ’পরিশোধিত শস্যের খাবারে প্রচুর ফাইবার থাকে। ফাইবারও প্রদাহ সীমিত রাখতে সহায়তা করে।
শিমের বিচি: শিমের বিচি ও অন্যান্য বিনসেও প্রচুর ফাইবার রয়েছে। এছাড়া এগু'লোতে পর্যা'প্ত অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও অন্যান্য প্রদাহনাশক উপাদানও থাকে।
বাদাম: বাদামের স্বাস্থ্যকর ফ্যাট প্রদাহ থামাতে সাহায্য করে। দিনে একমুঠের বেশি বাদাম খাবেন না, অন্যথায় ক্যালরি ও ফ্যাটের পরিমাণ বেড়ে হিতে বিপরীত 'হতে পারে। প্রদাহ কমাতে অলিভ অয়েলও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
মাছ: স'প্তাহে অন্তত দু’বার আপনার থালায় মাছ রাখু’ন। স্যালমন, টুনা ও সার্ডিনের মতো ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃ'দ্ধ মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ কমাতে পারে।
রসুন: হলুদ ও রসুন শুধু খাবারকে সুস্বাদুই করে না, এগু'লোতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, রসুন শরীরে প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।
যা খাবেন না
মিষ্টি, কেক, বিস্কুট ও কোমল পানীয়: এসব খাবারে তেমন পুষ্টি নেই। এগু'লো সহ’জে অ’তিরিক্ত খেয়ে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে; যার ফলে ওজন, র’ক্ত শর্করা ও কোলেস্টেরল অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া কোমল পানীয় ও অন্যান্য মিষ্টি পানীয় হচ্ছে প্রদাহ বৃ'দ্ধির প্রধান কালপ্রিট। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যথাসম্ভব চিনি এড়িয়ে চলতে পরাম’র্শ দিচ্ছেন, এমনকি মধুও বেশি পরিমাণে খাওয়া যাব'ে না।
উচ্চ চর্বি ও প্রক্রিয়াজাত লাল মাংস: এসব খাবারে প্রচুর স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। প্রতিদিন বেশি পরিমাণে চর্বিযু’ক্ত ও প্রক্রিয়াজাত লাল মাংস খেলে প্রদাহ অস্বাভাবিক মাত্রায় বৃ'দ্ধি পেয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁ’কির মধ্যে পড়বে।
মাখন, অ’পরিশোধিত দুধ ও পনির: এখানেও মূল সমস্যা হলো স্যাচুরেটেড ফ্যাট। এর পরিবর্তে কম চর্বির দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া যাব'ে।
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ফ্রাইড চিকেন ও অন্যান্য ভাজা খাবার: ভেজিটেবল অয়েলে এগু'লোকে ভাজা হয় বলে এগু'লো স্বাস্থ্যকর খাবার এমনটা নয়। কর্ন, স্যানফ্লাওয়ার ও অন্যান্য ভেজিটেবল অয়েলে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। আমা'দের শরীরে অল্প মাত্রায় ওমেগা-৬ লাগে, কিন্তু এই ফ্যাট বেশি খেলে শরীরে ওমেগা-৬ ও ওমেগা-৩ এর ভা’রসাম্য বিনষ্ট হবে। এর ফলে প্রদাহ বেড়ে যাব'ে।
কফি ক্রিমা’র, মা’র্গারিন ও ট্রান্স ফ্যাটের অন্যান্য খাবার: এসব খাবারের ট্রান্স ফ্যাট শরীরে এলডিএল কোলেস্টেরল বৃ'দ্ধি করে, যা প্রদাহ সৃষ্টি করে। ট্রান্স ফ্যাটের কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই, তাই এই চর্বি থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাকুন। যে খাবারের লেবেলে ‘পার্শিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল’ লেখা রয়েছে সেখানে ট্রান্স ফ্যাট আছে।
গম ও যব: এসব খাবারে গ্লুটেন রয়েছে। যাদের সেলিয়াক রোগ রয়েছে তাদেরকে গ্লুটেন সমৃ'দ্ধ খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। কিন্তু রোগটি না থাকলে এসব খাবার খেতে সমস্যা নেই, বরং উপকারই হবে।
Leave a Reply