১৯৬২ সালে পিঠে ছু'রি মেরেছিল চীন। ‘হিন্দু-চিনি ভাই ভাই’ স্লোগান দিয়ে আচমকাই ভারতীয় ভুখণ্ডে হা'মলা চালিয়েছিল চীনা লাল ফৌজ। ওই যু'দ্ধে ভারতীয় সেনার স'প্তম ব্রিগেডের নেতৃত্বে ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জন দালভি। সেই সময় অরুণাচল প্রদেশ বা তৎকালীন নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার এজেন্সি চীনা বাহিনীর হা'মলায় গু'ঁড়িয়ে গিয়েছিল। লাল ফৌজের হাতে ব'ন্দি হয়েছিলেন দালভি।
লড়াই শেষে ব'ন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ‘হিমালয়ান ব্লন্ডার– দ্য সার্টেইন রেইজেন টু দ্য সাইনো-ইন্ডিয়ান ওয়ার অব ১৯৬২’ শীর্ষক একটি বই লেখেন তিনি। প্রকাশ হওয়ার স'ঙ্গে স'ঙ্গেই বইটিকে ঘিরে দেখা দেয় তুমুল বিতর্ক। তারপরই সেটিকে নি'ষি'দ্ধ করে দেয় ভারত সরকার। না, লেখার বি'ষয়বস্তু ওই বই বা ব্রিগেডিয়ার জন দালভি নন। বিশ্লেষকরা বলেছেন, অতীতের প্রেক্ষাপটেই বর্তমানের ব্যাখ্যা মেলে। ওই বইয়ে একটি খুব সহজ কথা বলেছিলেন দালভি। সেটি হল–’পরিকাঠামো এবং পরিকল্পনার অভাবেই হেরেছে ভারত।’
এবার আসা যাক লাদাখে। ৬২’র ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে চীনের স'ঙ্গে প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটারের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পরিকাঠামো নির্মাণে মন দেয় ভারত। মনমোহন সিংয়ের ইউপিএ থেকে শুরু করে নরেন্দ্র মোদির এনডিএ সরকার পর্যন্ত সামর'িক পরিকাঠামো নির্মাণে জোর দিয়েছে। ফলে ওই অঞ্চলে ভারতের শক্তি উত্তরোত্তর বৃ'দ্ধি পেয়েছে। আর এতেই অশনি সংকেত দেখছে চীন। কারণ ২০১৪’র পর ভারতে ‘জাতীয়তাবাদ’-এর বিপুল উত্থানে লাল ফৌজের দখলে থাকা লাদাখের ‘আকসাই চীন’ উ'দ্ধারের দাবি জোরদার হয়েছে। ফলে কৌশলগতভাবে গু'রুত্বপূর্ণ গালওয়ান উপত্যকার দখল নিতে মর'িয়া চীন।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে, দুর্গম এলাকার ভারতীয় পোস্ট দউলত বেগ ওল্ডি (ডিবিও) পর্যন্ত ২৫৫ কিলোমিটার লম্বা রাস্তা আগেই বানিয়ে ফেলেছিল ভারত। গত বছর সেই সড়কের উপর একটি সেতুর উদ্বোধন করে আসেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেই রাস্তারই শাখাপ্রশাখা তৈরি করতে শুরু করেছিল বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও)। স'ঙ্গে শিয়ক নদীর উপর আরো বেশ কয়েকটি সেতু। তাতেই ক্ষু'ব্ধ হয় চীন। লেহ থেকে দরবুক, তার পর শিয়ক নদী ধরে ডিবিও পর্যন্ত সব রাস্তা পরিকল্পনামাফিক তৈরি হয়ে গেলে গলওয়ান উপত্যকায় ভারত অনেকটা সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে যাব'ে, যা কিছুতেই মানতে পারেনি বেইজিং।
এদিকে, অরুণাচল প্রদেশে দ্রুত সেনা ও ট্যাংক বাহিনী মোতায়েন করতে আসামে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর বগিবিল ও ধলা-শদিয়া সেতু নির্মাণ করেছে ভারত। ফলে ওই ফ্রন্টেও অবস্থান মজবুত হয়েছে ভারতীয় বাহিনীর। সবই করা হচ্ছে, সহজে সীমা'ন্তের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ার জন্য। যা মোটেই ভাল ভাবে নিচ্ছে না চীন। গালওয়ানের সং'ঘর্ষ তারই নমুনা হয়ে থাকল।
তবে শুধু সড়ক নির্মাণ নিয়েই উদ্বি'গ্ন নয় বেইজিং। সম্প্রতি আমেরিকার স'ঙ্গে ভারতের উষ্ণ সম্পর্ক ও চিনের অভ্যন্তরে করো'নাভাইরাস নিয়ে বাড়তে থাকা বিক্ষোভ থেকে নজর ঘোরাতে সীমা'ন্তে জেনেশুনেই পরিস্থিতি উত্ত'প্ত করে তুলছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের একাংশ।
সূত্র- সংবাদ প্রতিদিন।
Leave a Reply