বাঘ’ থেকে বন্য বিড়ালে’ পরিণত হয়েছে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করো'না ভাইরাস (কভিড-১৯)। ভাইরাসটি নিজ থেকেই শেষ হয়ে যেতে পারে। এর প্রতিরোধের জন্য টিকার প্রয়োজন না-ও লাগতে পারে। এমন মন্তব্য করেছেন ইতালির এক সংক্রা'মক রোগ বিশেষজ্ঞ। এ খবর দিয়েছে দ্য টেলিগ্রাফ।
ইতালির পলিক্লিনিকো সান মা'রতিনো হাসপাতালের অধ্যাপক মাত্তেও বাসেত্তি টেলিগ্রাফকে বলেন, গত মাসজুড়ে করো'না ভাইরাসের প্রকটতা হ্রাস পেয়েছে। বেশিরভাগ করো'না রোগীই এখন সুস্থ হয়ে উঠছেন, মা'রা যাচ্ছেন না। তিনি বলেন, করো'না রোগীদের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার মানে 'হতে পারে যে, ভাইরাসটির পুনরুত্থান ঠেকাতে আর টিকার প্রয়োজন নেই।
অধ্যাপক বাসেত্তি বলেন, ক্লিনিক্যাল পরিস্থিতি বিবেচনায় আমা'র ধারণা, ভাইরাসটির তীব্রতায় পরিবর্তন আসছে। গত মা'র্চ ও এপ্রিলের শুরুর দিকে এর আচরণ পুরোপুরি ভিন্ন ছিল। ইমা'র্জেন্সিতে আসা রোগীদের চিকিৎসা খুবই কঠিন ছিল।
তাদের অক্সিজেন ও ভেন্টিলেশনের দরকার পড়তো। কারো কারো নিউমোনিয়াও হয়ে যেত।
বাসেত্তি আরো বলেন, এখন, গত চার স'প্তাহ ধরে প্যাটার্ন-ভিত্তিতে এই চিত্র পুরোপুরি বদলে গেছে। ভাইরাসটি শ্বা'সযন্ত্রের ট্র্যাক্টের উপর কম চাপ ফেলছে। এটা হয়তো ভাইরাসটির ভেতরে কোনো জেনেটিক মিউটেশনের কারণে 'হতে পারে, যা এখনো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। এছাড়া, আমর'া এখন রোগটি সম্পর্কে আগ থেকে বেশি সচেতন ও সামলাতে সক্ষম হয়ে উঠেছি।
মা'র্চ ও এপ্রিলের দিকে করো'না ভাইরাসের আচরণ ‘আগ্রাসী বাঘের’ মত ছিল বলে বর্ণনা করেন বাসেত্তি। তিনি বলেন, কিন্তু এখন সেটা বন্য বিড়ালে পরিণত হয়েছে। এমনকী, ৮০-৯০ বছরের বৃ'দ্ধ’রাও এখন বেডে উঠে বসতে পারছেন, কোনো সাহায্য ছাড়াই শ্বা'স নিতে পারছেন। পুর্বে এধরনের রোগীরা দুই থেকে তিনদিনের মাথায় মা'রা যেত।
বাসেত্তির ধারণা, মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এখন ভাইরাসটির বিরু'দ্ধে সক্রিয় হয়ে উঠেছে এবং লকডাউন, মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখায় গু'রুতর রোগীর সংখ্যা কমেছে। এসব কারণে, ভাইরাসটির মধ্যে জেনেটিক বিবর্তন 'হতে পারে। তবে ঠিক কী কারণে ভাইরাসটির আচরণে এমন পরিবর্তন এসেছে তা এখনো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়নি।
ভাইরাসটি টিকা ছাড়াই বিদায় নিতে পারে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বাসেত্তি। তিনি বলেন, হ্যা, হয়তো কোনো টিকা ছাড়াই ভাইরাসটি পুরোপুরি বিদায় নেবে। সংক্রমণের সংখ্যা কমছে। এতে ভাইরাসটি নিজ থেকেই শেষ হয়ে যেতে পারে।
বৃটেনের অনকোলজি সেবাপ্রদানকারী রুথারফোর্ড হেলথের প্রধান মেডিক্যাল অফিসার ও অনকোলজিস্ট অধ্যাপক কারল সিকোরা বলেন, এমনটা হওয়া সম্ভব যে, বৃটিশ জনগণের মধ্যে ভাইরাসটির বিরু'দ্ধে আগের চেয়ে বেশি প্রতিরোধ ক্ষমতার হার বেড়েছে। হয়তো ভাইরাসটি নিজ থেকেই শেষ হয়ে যেতে পারে।
তবে ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটার জ্যেষ্ঠ ক্লিনিক্যাল লেকচারার ডা. ভারত পাঙ্খানিয়া বলেন, করো'না নিজ থেকে বিদায় নেবে এমন আশা স্বল্পমেয়াদী। আমি মনে করি না, ভাইরাসটি এত জ্বলদি চলে যাব'ে। যদি আ'ক্রা'ন্ত করার মতো কেউ না থাকে তাহলে চলে যাব'ে। যদি আমা'দের কাছে একটি সফল টিকা থাকে তাহলে আমর'া বসন্ত রোগ প্রতিরোধে যেমনটা করেছি, তেমনটা করতে পারবো। কিন্তু এই ভাইরাসটি অত্যন্ত সংক্রা'মক ও এটির বিস্তার বিস্তৃত। এই ভাইরাস অনেকদিন থাকবে।
Leave a Reply