বুড়িগ'ঙ্গা নদীতে ডুবে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি মর'্নিং বার্ড লঞ্চ নিয়ে পাওয়া যাচ্ছে নানা তথ্য। লঞ্চের মালিক পক্ষ অ'ভিজ্ঞ চালকের বদলে লঞ্চ পরিচালনা করেছিল অদক্ষদের দিয়ে।
সার্ভে সনদে একজন করে দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার ও ড্রাইভার থাকলেও দীর্ঘদিন থেকে অ'ভিজ্ঞ মাস্টার ও ড্রাইভার ছাড়াই লঞ্চটির অ'পারেশন পরিচালিত হচ্ছিল। সার্ভে সনদ ও ফিটনেস নেওয়ার সময় নৌ অধিদফতরে জমা দেওয়া কাগজে কলমে একজন দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার ও একজন ড্রাইভার দেখানো হলেও বাস্তবে ওই লঞ্চে কোনো মাস্টার ড্রাইভার কর্মর'ত ছিল না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মাস্টার যুগান্তরকে বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এমভি মর'্নিং বার্ড লঞ্চটি অ'ভিজ্ঞ মাস্টার ও ড্রাইভারের পরিবর্তে একজন সুকানী দিয়ে অ'পারেশন পরিচালনা করছিল। অ'ভিজ্ঞ মাস্টার ড্রাইভারের বেতন বেশি হওয়ায় তাদের রাখতে অনীহা ছিল মালিক পক্ষের। এজন্যই লঞ্চটি দু'র্ঘনায় পড়েছে বলে জানান তারা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম যুগান্তরের কাছে বি'ষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, অনেক ছোট লঞ্চ মাস্টার ড্রাইভার ছাড়া দীর্ঘদিন পরিচালিত হচ্ছে। আমি দীর্ঘদিন থেকে বন্দর কর্মকর্তাদের এ বি'ষয়ে সতর্ক করে আসছি। এমন দু'র্ঘটনার দায়ভার কোনোভাবেই তারা এড়িয়ে যেতে পারে না।
নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমোডর আরিফুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, লঞ্চটির সার্ভে রেজিস্ট্রেশনে একজন দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার ও একজন ড্রাইভারের কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে কর্মর'ত রয়েছে কিনা তা আমা'র জানা নেই। তবে দু'র্ঘটনার কারণ নির্ণয় করতে একটি ত'দন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দায়ীদের বিরু'দ্ধে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উ'দ্ধার স্থলে উৎসুক মানুষের ভিড়। কিছু সময় পরপর নৌপু'লিশ, বিআইডব্লিউটিএ ও রে'ড ক্রিসেন্টের সদস্যরা মাইকিং করে উৎসুক মানুষকে সরে যেতে মাইকিং করেন। এর মধ্যেই নৌবাহিনী, ফা’য়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএর ডবুরিরা অ'ভিযান চালান। প্রথম পর্যায়ে দীর্ঘ সময় অ'ভিযান চালানোর পর তিনজনের লা'শ উ'দ্ধার করা হয়।
এরপরই অল্প সময়ের ব্যবধানে একের পর এক লা'শ উঠতে থাকে। বিকাল পর্যন্ত ৩২টি লা'শ উ'দ্ধার করা হয়। এসব লা'শ সারিব'দ্ধ অবস্থায় দুটি ট্রলারে রাখা হয়। এছাড়া মুমূর্ষ
অবস্থায় উ'দ্ধার করা দুজনকে হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে মৃ'ত ঘোষণা করা হয়। পরে সবগু'লো লা'শ মিডফোর্ট হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে লা'শ শনাক্তের পর তা স্বজনদের বুঝিয়ে দেয়া হয়।
দু'র্ঘটনায় নি'হতরা হলেন মিজানুর রহমান (৩২), সত্যরঞ্জন বনিক (৬১), শহিদুল আলম (৬২), সুফিয়া বেগম (৫০), মনিরুজ্জামান (৪২), সুবর্না আক্তার (২৮), মুক্তা (১২),
সেলিম হোসেন ভুইয়া (৫০), আফজাল শেখ (৪৮), বিউটি (৩৮), ময়না (৩৫), আমির হোসেন (৫৫), মহিম (১৭), শাহাদাৎ (৪৪), শামীম বেপারী (৪৭), মিল্লাত (৩৫), আবু তাহের বেপারী (৫৮), দিদার হোসেন (৪৫), হাফেজা খাতুন (৩৮), সুমন তালুকদার
(৩৫), আয়েশা বেগম (৩৫), হাসিনা (২মাস), আলম বেপারী (৩৮), মোসাম্মৎ মা'রুফা (২৮), শাহিনুর হোসেন (৪০), তালহা (০২), ইসমাঈল শেখ (৩৫), তামিম (০৭), সুমনা আক্তার (২৫), সাইদুল ইসলাম (৪২), পাপ্পু (৩০) ও বাসুদেব নাথ (৪৫)
Leave a Reply