বাংলাদেশের অন্যতম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের আবি'ষ্কৃত করো'না ভ্যাকসিনের বিরাট অগ্রগতির খবর দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। তাদের ভ্যাকসিনটি প্রাথমিক এনিমেল ট্রায়ালে এন্টিবডি তৈরি করতে পেরেছে বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার (০২ জুলাই) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে এ বি'ষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তারা এ দাবি করেন। গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের ভ্যাকসিনটি বর্তমানে যে অবস্থায় আছে সেটিকে বিরাট অগ্রগতি হিসেবেও দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এ পর্যায়ে ভ্যাকসিনটি দ্বিতীয় ধাপে এনিমেল মডেলে ট্রায়াল করা হবে। এজন্য ৬ থেকে ৮ স'প্তাহ সময় লাগবে। এরপরই এটি মানব শরীরে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাওয়া যাব'ে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ৬ থেকে ৮ স'প্তাহ পর ভ্যাকসিনটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাওয়ার জন্য কোম্পানিটি সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চাইবে। অনুমতি পেলে তারা ট্রায়ালে যাব'ে।
এর আগে বুধবার (০১ জুলাই) প্রতিষ্ঠানটি দাবি করে, তারা পশুর শরীরে এই ভ্যাকসিনের সফলতা পেয়েছেন। মানবদে'হেও এর সফলতা পাওয়া সম্ভব বলে আশা করছেন তারা।
গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডা. আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আসলে আমর'া কাজ শুরু করার পর প্রাথমিকভাবে এটা নিয়ে সফল হয়েছি। এনিমেল মডেলে এটা সফল হয়েছে। এখন আমর'া আশা করি মানবদে'হেও এটা সফলভাবে কাজ করবে। আমর'া বি'ষয়টি নিয়ে এখন সরকারের সংশ্লিষ্ট দ'প্তরগু'লোর কাছে যাব'। এরপর তাদের দেওয়া গাইডলাইন অনুযায়ী পরবর্তী ধাপগু'লো সম্পন্ন করবো৷’
বি'ষয়টি নিয়ে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড বুধবার একটি বিবৃতিও দিয়েছে। বিজ্ঞ'প্তিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজ অনুযায়ী ম'ঙ্গলবার (৩০ জুন) পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৫ হাজার ৭৪৩টি সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স জমা হয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে জমা হয়েছে ৭৬টি। উক্ত সিকোয়েন্স বায়োইনফরম্যাটিক্স টুলের মাধ্যমে পরীক্ষা করে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড তাদের টিকার টার্গেট নিশ্চিত করে। যা যৌ'ক্তিকভাবে এই ভৌগোলিক অঞ্চলে অধিকতর কার্যকরী হবে বলে আশা করছেন তারা।
প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, উক্ত টার্গেটের সম্পূর্ণ কোডিং সিকোয়েন্স যুক্তরাষ্ট্রের এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজে জমা দিয়েছেন যা ইতিমধ্যেই এনসিবিআই কর্তৃক স্বীকৃত ও প্রকাশিত হয়েছে।
টিকা আবি'ষ্কারের বি'ষয়ে আরও বলা হয়, গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের গবেষণাগারে আবি'ষ্কৃত টিকাটির বিশদ বিশ্লেষণের পর ল্যাব'রেটরি এনিমেল মডেলে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে যথাযথ এন্টিবডি তৈরিতে সন্তোষজনক ফলাফল পেয়েছেন বলে দাবি করছেন তারা।
বি'ষয়টি নিয়ে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর র'শিদ বলেন, ‘এই টিকাটির সুরক্ষা ও কার্যকারিতা নিরীক্ষার লক্ষ্যে আমর'া ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এই সুরক্ষা ও কার্যকারিতা পরীক্ষায় সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।’
গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের এই ভ্যাকসিনের বি'ষয়ে স্বাস্থ্য অধিদ'প্তরের সহকারী পরিচালক (হেলথ ইমা'রজেন্সি অ'পারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম) ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, ‘আমা'দের এখনো এমন কিছু জানানো হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী তারা বি'ষয়টি অফিসিয়ালি চিঠি দিয়ে আমা'দের জানাবে। এরপর আমর'া সেটা দেখব।’
এদিকে, বাংলাদেশে নতুন করে আরও ৩ হাজার ৭৭৫ জনের শরীরে করো'নাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট ১ লাখ ৪৯ হাজার ২৫৮ জনের শরীরে করো'নাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেল। এছাড়া গেল ২৪ ঘণ্টায় মা'রা গেছেন আরও ৪১ জন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃ'তের সংখ্যা ১ হাজার ৮৮৮ জন।
বুধবার (০১ জুলাই) দুপুরে করো'নাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদ'প্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
এর আগে ম'ঙ্গলবার (৩০ জুন) জানানো হয়েছিল, দেশে ৩ হাজার ৬৮৩ জন করো'না রোগী শনাক্ত হয়েছেন এবং ৬৪ জনের মৃ'ত্যু হয়।
বাংলাদেশে গত ৮ মা'র্চ প্রথম করো'না ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃ'ত্যুর খবর আসে ১৮ মা'র্চ। দিন দিন করো'না রোগী শনাক্ত ও মৃ'তের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার। ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মা'র্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়িয়ে এ ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়।
ছুটি শেষে করো'নার বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেই ৩১ মে থেকে দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেয়া হয়। তবে বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
Leave a Reply