চোখ ব’ন্ধ করে একবার ভা’বুন তো, আপনি মু’সলমান হ’ওয়া স’ত্ত্বেও না’মাজ রো’জা রা’খতে পা’রছেন না, কো’রআন ও অ’ন্যান্য ইস’লামিক জ্ঞা’ন অর্জ’ন কর’তে পা’রছেন না, না’রীরা হি’জাব চাইলেও ব্য’বহার ক’রতে পা’রছেন না, এ’মনকি সর’কারি চা’করিতে হি’জাবি নারী’দের নি’য়োগ প’থ ব’ন্ধ; এক’ কথায় ধ’র্মীয় স্বা’ধীনতার স’কল প’থ ব’ন্ধ ক’রে দে’য়া হ’য়েছে স’র’কারিভাবে। ত’খন আ’পনি কি করবেন? এই প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে আপনারা হয়তো ভাবছেন, এমন কোন সমাজ ব্যবস্থার অ’স্তিত্ব কী বর্তমান পৃ’থিবীর কো’থাও খুঁ’জে পা’ওয়া যাব'ে! অথচ এ’মনি ঘ’টনা দীর্ঘ ৭০ বছর যাব'ত প্র’ত্যক্ষ করে আ’সছে চী’নের উ’ই’ঘু’র মু’সলিম স’ম্প্রদায়, চী’ন স’রকারের নি’র্মম নি’র্যাতন এবং নৃ’শংশতার সা’ক্ষী শি’নজিয়াং প্র’দে’শের ১ ‘কো’টি ১০ লা’খ মু’সলমান।
চী’নের শি’নিজিয়াং প্রদেশের উ’ইঘুর মু’সলিম নি’র্যাতনের কা’হিনী বহু পু’রোনো। চী’নের একেবারে পশ্চিম প্রা’ন্তে অ’বস্থিত স’বচেয়ে ব’ড় প্র’দেশ এ’টি। শি’নজিয়াং কা’গজে ক’লমে স্বা’য়ত্তশাসিত হলেও, চী’নের কে’ন্দ্রীয় স’র’কারের ক’ঠোর নি’য়ন্ত্রণে প’রিচালিত হয়। এ’ই অঞ্চলের শ’হরগু'লোর ‘ভেতর দি’য়েই গে’ছে সি’ল্ক রোড, তা’ই শ’তাব্দীর পর শ’তাব্দী ধরে শি’নজিয়াং এর অ’র্থনীতি কৃ’ষি ও বা’ণিজ্যের ও’পর নি’র্ভরশীল। বিং’শ শ’তা’ব্দীর শু’রুর দি’কে উ’ইঘুররা নি’জেদের স্বা’ধীনতা ঘো’ষণা করে। ১’৯৪৯ সা’লে চী’নের স’মাজতান্ত্রি’ক বিপ্লবের কিছুদিন পর চী’নের কমি’উনিস্ট স’রকার উ’ইঘুরদের বৃ’'হত্তর চী’নের সা’থে যো’গ দে’য়ার প্র’স্তাব জা’নায়।
প্র’স্তাব মে’নে না নে’য়ার প’র থে’কে শু’রু হ’য় উ’ইঘুর মু’সলিম'দের উ’পর নি’র্যা’ত’ন, নে’মে আসে বি’ভী’ষি’কা’ম’য় অ’ত্যা’চা’র। সাং’স্কৃতিক বি’প্লবের না’মে উ’ইঘুরদের ধ'র্ম’ ও সং’স্কৃতির স্থলে ক’মিউনিজম চা’পিয়ে দে’ওয়ার জ’ন্য চী’না ক’মিউনিস্টরা উঠে পড়ে লেগে যায়। এর অংশ হিসেবে তাদের ধ'র্মীয় শিক্ষা নি'ষি'দ্ধ করা হয়। ধ’র্মীয় প্রা’র্থনালয় ভে’ঙে দেয়া হয়। ধ'র্মী’য় কা’র্যাব'লীর উপর নানা বি’ধি’নি’ষে’ধ আ’রোপ করা হয়। চীনাদের এসব অ’প’ক’র্মের বি’রু'দ্ধে যখন উ’ইঘুররা বি’দ্রোহ ক’রা শুরু করে তখন রা’ষ্ট্রীয় বা’হিনীর স’হায়তায় হা’জার হা’জার নি’রীহ উ’ইঘুরকে হ’ত্যা করা হয়। একই সাথে অনেককে করা হয় গৃহ’হীন। স’শস্ত্র বাহি’নীর স’দস্যরা বা’ড়িতে ঢু’কে প্রি’য়জনদের ধ’রে নিয়ে যাচ্ছে, স’ন্তানদের ধরে নিয়ে রা’খা হচ্ছে ক্যা’ম্পে। এরকম ভী’তিকর পরি’স্থিতির মা’ঝেই চলছে তাদের জী’বন।
শি’নজিয়াং প্র’দেশে ‘উইঘুরদের নি’জস্ব সং’স্কৃতি ধ্বং’স করে দেয়ার জন্য চী’নের অন্য অ”ঞ্চল থেকে মূল চীনাদের এখানে এনে পুন’র্বাসন করা হয়। ফলে ১৯৪৯ সালে শি’নজিয়াং এ যেখানে উ’ইঘুর মুস’লিম'দের সংখ্যা’ ছিল ৯৫%, ১৯৮০ সালের মধ্যেই তা ৫৫% এ নেমে আসে। ১৯৮৮ সালে চীনাদের এই দ’মন পী’ড়নের 'হতে মুক্তি লাভ ও চী’নের থেকে স্বা’ধীন হওয়ার জন্য উ’ইঘুররা প্রতিষ্ঠা করেন – পূর্ব তু’র্কিস্তান ই’সলামিক পা’র্টি। এই সংগঠনের মা’ধ্যমে তারা কিছু প্র’তিবাদ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু চী’না স’রকার ১৯৯০ সালে সেখানে পরি’কল্পিত ভাবে এক দা’'ঙ্গা প’রিচালনা করে। পরে এই দা’র অ'ভিযোগেই হা’জার হাজার উ’ইঘুর যুব’ককে অ’ন্যায়ভাবে হ’ত্যা করে এবং কা’রাদ'ণ্ড প্র’দান ক’রে চী’ন সর’কার।
উ;ইঘুর তথা মু;সলমানদের ধ্বং;স করার জন্য যা যা করা দর;কার তার কোন কি;ছুই বাকি রাখছে না চী;না প্র;শাসন। হি;উম্যান রাই;টস ওয়াচ এক বিবৃ;তির মাধ্যমে সেই ভ;য়াবহ পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছে। তা হু;বুহু তুলে ধ;রছি, ‘উই;ঘুর সম্প্রদায়ের লো;কজনের ওপর ক’ড়া নজর রাখা হচ্ছে। তাদের বাড়ি;ঘরের দর;জায় লা;গিয়ে দেওয়া হচ্ছে; বিশেষ কোড, ব;সানো হ;য়েছে মু;খ দেখে স;নাক্ত করা যায় এরকম ক্যা’মেরা। ফ;লে কোন বাড়ি;তে কারা'; যাচ্ছেন, থা;কছেন বা বের হচ্ছেন তার উপর ক;র্তৃপক্ষ সত;র্ক নজ;র রাখতে পারছে। তাদেরকে নানা ধরনের বায়োমেট্রিক পরীক্ষাও দিতে হচ্ছে।’
জা’তিসং'ঘের মানবাধিকার বি'ষয়ক কমিটি ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলেছে, প্রায় ১০ লাখ ‘উইঘুরকে চীনের ‘স’ন্ত্রা’স’বা’দ’ কেন্দ্রগু'লোয় আট'ক রাখা হয়েছে। ২০ লাখ মানুষকে ‘রাজনৈতিক ও রাজনৈতিক পুন’র্বিবেচনার শি’বিরে’ অব’স্থান করতে বা’ধ্য করা হয়েছে। এসব তথ্যের সাথে মা’নবাধিকার সং’স্থাগু'লোর অ’ভি”যোগের মিল পাওয়া যায়। আ’ন্তর্জাতিক মান’বাধিকার সং’গঠন হি’উম্যান রা’ইটস ও’য়াচ বলছে, যেসব লোকজনের ২৬টি তথাকথিত ‘স্প’র্শকাতর দেশে’র’ আ’ত্মীয়-স্ব’জন আ’ছেন তা’দেরকে এ’সব ক্যা’ম্পে আ’টকে রাখা হয়েছে। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে ইন্দো’নেশিয়া, কা’জাখস্তান এবং তুর’স্কসহ আরো কিছু দেশ। হিউ’ম্যান রাই’টস ওয়াচ বলছে, এছাড়াও যারা মেসেজিং অ্যাপ হো’য়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বিদেশের কারো সাথে যোগাযোগ করেছে তাদেরকে টা’র্গেট ক’রেছে ক’র্তৃপক্ষ।
জাতি’সং'ঘের প্রতিবেদন ও মান’বাধিকার সংগঠনগু'লোর প্রা'প্ত ত’থ্য থেকে ভ’য়াবহ কিছু বি'ষয় জানা গেছে। ‘শি’ক্ষা শিবির’ না’মক ক্যা’ম্পে যা’দেরকে রাখা হয়েছে তাদেরকে চীনা ম্যা’ন্ডারিন ভাষা শেখানো হচ্ছে। কমিউনিস্ট পার্টির প্রশংসার কথা বলা এবং তাদের সঠিক আ’চরণ পরিচালনার নিয়মগু'লো কঠোরভাবে মনে রাখতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাদের নিজেদের ধ'র্মীয় বি’শ্বা'সের সমা’লোচনা করতে অথবা সেই ধ’র্ম প’রি’ত্যা’গ করতে বা’ধ্য করা হচ্ছে। এ অভ্যা’সগু'লোর অং’শ হিসেবে ‘চীন সর’কার সাং’ঘ’র্ষিক’ভাবে শি’নজিয়াংয়ের উ’ইঘুর সংস্কৃ’তি ও জাতিগত সত্তাকে মু’ছে ফে’লার চে’ষ্টা করছে।
প্রা’'প্তবয়স্কদের জন্য এই শি’ক্ষাশিবিরের পাশাপাশি উইঘুর শিশুদের ক্যাম্প ও স্কুল রয়েছে, যেখানে তাদের পরিবার, ভাষা, ধ'র্ম ও সংস্কৃতি থেকে আলাদা করে ফেলা হয়। শিক্ষাশিবিরে পাঠানো লাখো উই’ঘুরের নি’র্ম’ম নি’র্যা’তনের ঘ’টনা বি’শ্ব মিডি’য়াতেও এসেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টা’রন্যাশনাল বলছে, ২০০৯ সালের দা’'ঙ্গা’র পর চীনা সরকারের স’মালোচনা করে শা’ন্তিপূর্ণভাবে ম’তামত প্রকা’শের দা’য়ে চী’ন সরকার গো’পনে বে’শ কয়ে’কজন উই’ঘুর মুসলিম বু'দ্ধি’জীবীর বি’চার ক’রেছে। বি’শিষ্ট উ’ইঘুর ব্য’ক্তিত্ব গত কয়েক বছরে আট'’ক বা অ’দৃশ্য হয়ে গেছেন শিন’জিয়াং থেকে। এদে’র মধ্য আছেন ইস’লামি শি’ক্ষাবিদ মোহা'ম্ম'দ সালিহ হা’জিম, অর্থনী’তিবিদ ইলহা'ম তোকতি, নৃ’তাত্ত্বিক রা’হাইল দাউদ, পপ’শিল্পী আ’বদুর রহিম হায়াত, ফুট’বল খেলোয়াড় এরফান হিজিম প্রমুখ। ২০১৬ সালে ‘মেকিং ফ্যামিলি’ নামের একটি উদ্যোগ চালু করে চীন। এর মাধ্যমে উইঘুর পরিবারকে প্রতি দুই মাসে কমপক্ষে পাঁচ দিনের জন্য তাদের ঘরে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যদের হোস্ট করতে বা’ধ্য করে।
শি’নজিয়াং প্র’দেশে সং’বাদ মাধ্যম নি’ষি'দ্ধ। তাই এসব অ’ত্যা’চা’রের নি’র্মমতা মানুষ খুব কমই জানতে পারছে। চী’ন স’রকার ব’রাবরই এসব অ’ভি’যো’গ অ’স্বীকার করে আ’সছে। উ’ইঘুর মুসল’মানদের বিরু’'দ্ধে বর্ব’রোচিত নী’তির ব্যাপারে চীন বলে যে ‘বি’চ্ছি’ন্ন’তা’বা’দ, স’ন্ত্রা’সবাদ ও ধ'র্মীয় চরমপন্থার মোকাবিলা করার জ’ন্যই তারা নানান প’লিসি নিতে বা’ধ্য হচ্ছে। কি’ন্তু দাড়ি রাখা, রমজা’ন মাসে রোজা রাখা কীভাবে ধ'র্মী’য় চর’মপন্থা, তা বিশ্ব’বাসীকে বো’ঝাতে পা’রে না। মূল’ত ধ'র্মী’য় অনুষ্ঠান ‘তাদের মতে চর’মপন্থা। আর এই চরম’পন্থা দ’মনের না’মে নি’র্বিচারে গ্রে'’'প্তার, জে’ল-জ’রিমানা চল’ছে। অ’পরদিকে গো’টা বি’শ্ব বি’বেক এই ‘বর্বর নি’র্যাতন ‘চেয়ে চে’য়ে দেখছে। মাঝেমধ্যে নি’ন্দা করে বি’বৃতি দেওয়া ছা’ড়া কোনো দেশ এই ব্যাপা’রে তেমন কোন পদ’'ক্ষেপ নি’চ্ছে না বা নিতে পা’রছেন না। ত’বে সকল উ’দারবাদী শা’ন্তিপ্রিয় মানু’ষের এক’টাই চাও’য়া, অচি’রেই উ’ইঘুর মুস’লিমর'া যেন চী’নে তাদের ধ'র্মী’য় ও সাংস্কৃতিক স্বা’ধী’নতা ‘ফি’রে পা’য়।
Leave a Reply